‘এসো হে নবীন, বাজিয়ে সুর-লহরী উল্লাসিত নব বীণ। আজ সুর মিলিয়ে গাইব জয়যাত্রার গান, আনন্দে আহ্লাদিত নবীন প্রাণ।’ নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন বাক্যই যেন উচ্চারিত হচ্ছে প্রবীণদের কন্ঠে।
গুচ্ছের ভর্তি কার্যক্রম শেষে নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর ব্যতিক্রম নয় লাল মাটির সবুজ ক্যাম্পাস খ্যাত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে চত্বরে লেগেছে নবীন প্রাণের জোয়ার। দলবেঁধে ছুটছে ক্যাম্পাসের এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত। হাজারো স্বপ্ন নিয়ে নতুন ক্যাম্পাসে ভিড় করা শিক্ষার্থীরা গল্প আড্ডায় মাতিয়ে তুলছে গোলচত্বর থেকে শুরু করে কাঁঠালতলা, মুক্তমঞ্চ ও শহীদ মিনার। বিভাগের করিডোর জুড়ে যেন নতুন প্রাণের উচ্ছ্বাস।
এবারের গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্য থেকে শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীদের মনের অভিব্যক্তির গল্প তুলে ধরেছেন চাঁদনী আক্তার।
সাংবাদিকতায় পড়ার কথা কখনো ভাবতেও পারিনি
ছোট থেকেই সাংবাদিকতা বিষয়ের দিকে আমার বিশেষ আকর্ষণ কাজ করতো কিন্তু কখনো ভাবতে পারিনি যে এই বিষয়ে পড়ার আমার সুযোগ হবে, তাও আবার সবার স্বপ্নের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেদিন থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পদচারণ হয়, সেদিন থেকেই সবকিছুর প্রতি খুব ভালোলাগা কাজ করতে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এত সুন্দর আর শিক্ষকদের অমায়িক ব্যবহারে আমি মুগ্ধ। পাশাপাশি সিনিয়রদের স্নেহ ভালোবাসায় আমার এখন সব থেকে ভালোবাসার জায়গায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। আশা করি আমি অনেক কিছু শিখতে পারবো আর অর্জনের ঝুড়িটাও খালি থাকবে না ।
অঙ্কিতা দাস ঐশী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের চিন্তা হলো ভালো একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে আমিও তার ব্যতিক্রম নই। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য শুরু করে দিয়েছিলাম ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি। শুরুতে স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ওখানে হয়নি। তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পজিশন পেয়েও আমি ভর্তি হই নাই। কারণ আমার পছন্দের বিষয় ছিল আইন। তারপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়ে যাই। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে যে সুযোগ-সুবিধা দেখে আমি ভর্তি হলাম তা হলো বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো। তাছাড়া একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে যে অবস্থানে কল্পনা করেছি, কুবির অবস্থান ঠিক সে জায়গায়। শিক্ষা সংস্কৃতিতে আমার বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে। টিউশন ফ্যাসিলিটি, সেশনজটমুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা খুবই ভালো। আমি মনে করি, অদূর ভবিষ্যতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে।
সাগর আহমেদ, আইন বিভাগ।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় অনেক এগিয়ে
জীবন মানেই যে যুদ্ধ এইটা অ্যাডমিশন জার্নিতে এসে বুঝতে শিখেছি। একজন শিক্ষার্থীর অ্যাডমিশন জার্নিটা সত্যিই অনেক ক্রিটিক্যাল। আমার বেলায়ও ব্যতিক্রম ছিল না। এখনও মনে পড়ে নির্ঘুম রাতের কথা। পাবলিকে পড়ার স্বপ্ন আমার চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। ভগবানের অশেষ কৃপায় আমার স্বপ্ন পূরণ করলো লালমাটির বুকের প্রিয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি এই ক্যাম্পাসে ঠাঁই পেয়ে।
ডও অং মারমা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা।
শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্টের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন
প্রথমবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েও কোথাও সুযোগ পাইনি। ভেবেছিলাম হয়ত পাবলিকে পড়ার স্বপ্ন শেষ, কারণ প্রথমবার এতো ভালো করে পড়েও যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সু্যোগ পাইনি তখন ভাবিনি দ্বিতীয়বার সুযোগ পাবো। কিন্তু আমাদের ভর্তি কোচিং এর স্যারদের অনুপ্রেরণায় আমি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। এক-দুই মাসের প্রস্তুত নিয়ে গুচ্ছে পরীক্ষা দেই। ভগবানের অশেষ কৃপায় এইবার পজিশন এবং মেরিট ভালোই আসে। তাছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুব ভাল পজিশনে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানের শিক্ষার গুনগত মান অনেক ভালো। শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্টের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এটা খুবই ভালো লেগেছে যে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার দিকে উৎসাহ দিচ্ছে। এজন্য যখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাই আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছি। ইউটিউব, ফেসবুকে যখন ক্যাম্পাসের ছবি এবং ভিডিও দেখেছিলাম তখন থেকেই এই ক্যাম্পাস আমার কাছে অসম্ভব সুন্দর লাগতো। আর বাস্তবে যখন ক্যাম্পাসে এসে নিজে দেখলাম আমার আরো অপুর্ব লেগেছে আমার প্রিয় এই বিশ্ববিদ্যালয়।
হৃদয় সাহা, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।