চাঁদনী আক্তার
অবসর সময়কে সবাই কাজে লাগাতে চায়। কিন্তু কয়জনই বা পারে কাজে লাগাতে। নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে কাজে লাগাতে। সবাই পারুক আর না ই বা পারুক। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত রশীদ ঠিকই পেরেছেন। অবসর সময়ে নিজের পুরানো অভ্যাসকে কাজে লাগিয়েছেন ক্যালিগ্রাফিতে। এখন ক্যালিগ্রাফির কাজ করে ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত মুখ।
ছোটবেলা থেকেই আরবি লেখালেখি করতেন নুসরাত। সেখান থেকেই ক্যালিগ্রাফির যাত্রা শুরু। তবে পড়াশোনার চাপে আর আরবি লিখায় নিয়মিত হতে পারেননি তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পদার্পণ করার পরে পুরোনো সেই শখকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে হাত দেন ক্যালিগ্রাফিতে। এখন নিয়মিতই ক্যালিগ্রাফি করেন তিনি।
নুসরাত জানান, মনে হলো আবার শুরু করার দরকার। শখ থেকেই আবার শুরু করি ক্যালিওগ্রাফি। প্রথমে ইউটিউব দেখে ক্যালিওগ্রাফি করতাম। তারপর খাতায় আঁকাআঁকি করি কয়েকদিন। ধীরে ধীরে দেখি হাতের কাজ ভালো হচ্ছে। তারপর নিজের উপর আত্মবিশ্বাস নিয়ে পবিত্র কোরআন শরীফের বিভিন্ন সুরার ক্যালিওগ্রাফি করি। এখন কোরআন শরীফের প্রথম এবং দ্বিতীয় পারা লিখতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরোও বলেন, স্কুলে থাকতে আমাদের আরবি শিক্ষক আমাদের বাড়ির কাজ হিসেবে আরবি লেখা লিখতে দিতেন। তখন নিয়মিত আরবি লিখতাম। সেই থেকে মূলত আরবি লেখার হাতেখড়ি। এরপর মাঝখানে অনেক বছর চলে যায়, আরবি আর লেখা হয় না। তারপর হঠাৎ করে ২০২১ সালে একদিন ইচ্ছে হলো একটু আরবি লিখার। লিখতে বসে দেখলাম যে অনায়াসে লিখতে পারি। তারপর শুরু করলাম আরবি লেখা।
ক্যালিগ্রাফি এখন নুসরাতের স্বপ্ন। নেশায় পরিণত হয়েছে তার। নুসরাতের আশা, সম্পূর্ণ কোরআন ক্যালিগ্রাফি করবেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতিদিন বা কয়দিন পরপর অন্তত একটা ক্যালিওগ্রাফি করতে না পারলে মনে শান্তি আসে না।
তবে এখনো পেশাগতভাবে ক্যালিগ্রাফি করেন না তিনি। তিনি বলেন, আমি প্রফেশনাললি ক্যালিওগ্রাফি পারি না, শিখিও নাই। শিখার স্বপ্ন আছে আমার। যখনই একটু মন খারাপ থাকে বা পড়াশোনা করতে ইচ্ছে করে না তখনই আমি বসে যাই ক্যালিওগ্রাফি করতে বা আরবি লিখতে। তবে ক্যালিওগ্রাফি করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি বেশি। দেখতে দেখতে অনেকগুলো ক্যালিওগ্রাফি করেছি। কয়েকটা বাঁধাই করে নিজের কাছে রেখে দিয়েছি।এগুলো দেখলে মনে প্রশান্তি পাওয়া যায়।
লেখক: শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়