মোঃ হাছান:
অন্ধকার ও অজ্ঞতার আঁধার পেরিয়ে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আশার আলোর দিশারী হিসেবে পরিচিত হয়েছে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব চরকাঁকড়া ছাত্র কল্যাণ সংস্থা।
শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিকভাবে উপযোগী কর্মক্ষম ও কল্যাণকামী দেশ প্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের একদল তরুণ মেধাবী ছাত্রের অক্লান্ত পরিশ্রম, অপরিসীম আন্তরিকতা এবং কিছু মহৎ মানুষের সহযোগিতায় ২০০৮ সালের ৪ঠা অক্টোবর গড়ে ওঠে পূর্ব চরকাঁকড়া ছাত্র কল্যাণ সংস্থা।
সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউনুস সুমন বলেন, ‘আমাদের সমাজের হতদরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে গিয়ে নানামুখী সমস্যার মধ্যে পড়েন। মাঝে মধ্যে দেখা যায় সমাজের কিছু দরিদ্র পিতার পক্ষে শিক্ষা উপকরণ ক্রয় করা কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করতে না পারায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। এক জন মেধাবী শিক্ষার্থীর দরিদ্রের কারনে পড়াশুনা যাতে বন্ধ না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা এ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করি। তিনি আরও বলেন, সংস্থার শুরু থেকে অর্থ সংগ্রহ করে পরিকল্পনামাপিক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ দেওয়া শুরু করি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নানা কল্যাণমুখি কাজ করে আসতেছি সামনে করে যাবো এভাবে।’
বর্তমানে এ সংস্থাটি সাধারণ ছাত্রের কাছে যেমন সমাদৃত তেমনি বহিরাগতদের কাছে ও নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রদের নানা মুখি কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরমধ্যে প্রতিবছর গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ গাইড, বই, খাতা,কলম ইত্যাদি দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এছাড়াও গরিব শিক্ষার্থীদের বেতন, পরিক্ষার ফি বাবদ বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশে বিভিন্ন সময়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, বক্তব্য প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।
মেধাবীদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার রুটিন ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মানে প্রতিবছর কৃতি সংবর্ধনা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের ইতিহাস ঐতিহ্যর সাথে পরিচয় করাতে প্রতিটি জাতীয় দিবস শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হয়। গ্রামের মানুষের অজ্ঞতা থেকে মুক্তি ও শিক্ষার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক ব্যানার পোস্টার ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা হয়।শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলা ও আনন্দ ভ্রমনের আয়োজন করা হয়।
সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতেন ইফতার পার্টি ও ঈদ প্রিতির আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের পাশাপাশি সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে এসেছে এই সংস্থার সদস্যরা।
সংস্থাটির বেশির ভাগ সদস্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত। নানা ঘাতপ্রতিঘাত পেরিয়ে প্রান্তিক ছাত্রদের কল্যাণে নানা মুখি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। সকলের আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টায় সমাজের অন্ধকার দূরে করে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের মাঝে সুশিক্ষার আলো পৌঁছাতে সক্ষম হবে। সেটাই এখন প্রত্যাশা।
লেখক: শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
অসাধারণ ও তথ্যভিত্তিক লেখার জন্য স্নেহের ছোট ভাই হাসান কে অভিনন্দন।