27.8 C
Dhaka
Saturday, June 28, 2025

ইসলামে পশু কোরবানি দেওয়া কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল?

Must read

বিডিফিচার ডেস্ক: 

কোরবানি মুসলিম উম্মাহের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। ইসলামি বিধানমতে কোরবানির উদ্দেশ্য হলো নির্দিষ্ট দিনে পছন্দের পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উপর এটি ওয়াজিব। এখানে সামর্থ্যবান বলতে যারা জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা সোনা বা এর সমমূল্যের মালিক হয় তাদেরকে বুঝানো হয়েছে। ইসলামে এর অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।

কোরবানি শব্দটি ‘কুরবুন’ মূল ধাতু থেকে নির্গত। এর ইতিহাস জানতে হলে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর যুগে। তখন থেকেই সকল নবীদের শরীয়তেই কোরবানির বিধান ছিল। যার বর্ণনা সূরা মায়েদার ২৭ ও ২৮ নম্বর আয়াতে রয়েছে। এই দুই আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘আর তুমি তাদের কাছে আদমের দুই পুত্রের সংবাদ যথাযথভাবে বর্ণনা কর, যখন তারা উভয়ে কুরবানি পেশ করলো। এরপর তাদের একজন থেকে গ্রহণ করা হলো, আর অপরজন থেকে গ্রহণ করা হলো না। সে বললো, ‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করবো। অন্যজন বললো, ‘আল্লাহ কেবল মুত্তাকিদের থেকে গ্রহণ করেন।’ ‘যদি তুমি আমার প্রতি তোমার হাত প্রসারিত করো আমাকে হত্যা করার জন্য, আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য আমার হাত তোমার প্রতি প্রসারিত করবো না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি।’

কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের উপর যে কোরবানির পদ্ধতি চলমান তা হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কোরবানি করার চেষ্টার মাধ্যমে এসেছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা আস-সাফফাতের ১০২ ও ১০৩ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘এরপর যখন সে তার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছলো, তখন সে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবাই করছি, অতএব দেখ তোমার কী অভিমত; সে বলল, ‘হে আমার পিতা, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আমাকে ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। এরপর তারা উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করলো এবং সে তাকে কাত করে শুইয়ে দিল।’

পাশাপাশি হাদিস শরীফেও এর বর্ণনা রয়েছে। সাহাবারা একদা রাসূল (সা:) প্রশ্ন করেছিলেন কোরবানি কী? তখন আল্লাহর রাসুল (সা:) উত্তর দিলেন ইহা তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ:) এর সুন্নাত। (মিশকাত, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)। আমরা যে কোরবানি করি তা যে মহান রব আমাদেরকে দান করেছেন তাঁর খলিল হযরত ইবরাহিম (আ:) এবং পুত্র ইসমাইল (আ:) এর মাঝে সংঘটিত কোরবানির পরীক্ষা থেকে।

কোরবানির যেমন অনেক গুরুত্ব রয়েছে তেমনি সামর্থ্য থাকার পরেও এটা পরিত্যাগ কারীর ওপর বিশ্বনবী (সা:) কঠিন সতর্কবার্তা পেশ করেছেন। পবিত্র কুরআন ও হাদীসের বহু জায়গায় এর গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের সূর কাউসারের ২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং পশু কোরবানি কর।’ পবিত্র হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে লোক সকল প্রত্যেক (সামর্থ্যবান) পরিবারের উপর কোরবানি দেয়া অপরিহার্য।’ (সুনান ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৩১২৫)। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ইদগাহে না আসে। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৩১২৩)।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest article