28 C
Dhaka
Saturday, June 28, 2025

রংপুরের মোড়ে মোড়ে পিঠা তৈরির ধুম

Must read

শিপন তালুকদার

শীত শুরু হলেই রংপুরে শুরু হয়ে যায় পিঠা তৈরির ধুম। নগরীর মোড়গুলিতে বসে সারি সারি সাজানো বাহারি পিঠার দোকান। লাকড়ির উনুনে তৈরি এসব পিঠার স্বাদ নিতে ভীড় করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। ক্রেতাদের চাহিদার বিবেচনায় এখানকার দোকানগুলিতে তৈরি হয় ভাপা, পুলি, চিতই, পাটি সাপটা, ডিম ও নারিকেল পিঠা।

নগরীর মর্ডান মোড়, পার্কের মোড়, লালবাগ ও খামার মোড় ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। ভ্রাম্যমাণ এসব দোকানগুলোতে সন্ধ্যা থেকেই পিঠা বানানোর কাজ শুরু হয়ে যায়। চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। কেউ আসে আগুনের আঁচে পিঠার স্বাদ নিতে, কেউবা আবার নিয়ে যাচ্ছে পরিবারের জন্যে। পিঠা খেতে খেতে গল্পে আড্ডায় মেতে উঠে কেউ কেউ। ক্রেতাদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে রীতিমতো লাইনে দাঁড়াতে হয় অনেককে।

ক্রেতারা জানান, নগরীতে কাজের ব্যস্ততায় বাড়িতে পিঠা বানানো হয়ে ওঠে না। তাই ভ্রাম্যমান এসব দোকানগুলো থেকেই পিঠার স্বাদ নিতে হয়। বিক্রেতারা জানান, বাড়তি মুনাফার আশায় শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করেন। আর চাহিদা থাকায় পিঠাও ভালো বিক্রি হয়।

পিঠা খেতে আসা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেকদিন পর চিতই ও ভাপা পিঠা খেলাম। পড়াশুনার ব্যস্ততায় বাড়িতে যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই পিঠাও খাওয়া হয় না। এখন পিঠা খেতে ইচ্ছা হলে দোকানগুলোতে চলে আসি।

গুড় দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠা

মামুন মিয়া নামের একজন বলেন, চিতই পিঠা হলো রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আর শীতকালে এ পিঠা হয়ে ওঠে সন্ধ্যার নাস্তা। মাত্র দশ টাকাতেই একটি পিঠা পাওয়া যায়। আমরা বন্ধু-বান্ধব মিলে সপ্তাহে তিন-চার দিন এ পিঠা খাওয়ার জন্যে লালবাগে চলে আসি। আমার কাছে এ পিঠা ভালোই লাগে।

পিঠা খেতে আসা রংপুরের বাসিন্দা তাহসিন বলেন, শীতের সময় গরম ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাটাই আলাদা। এর কোন তুলনা হয় না।

রংপুর লালবাগের পিঠা ব্যবসায়ি সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা শীতকালে তিন মাস পিঠা বিক্রি করি। আমার দোকানে চিতই ও ডিম পিঠা তৈরি হয়। আতপ চালের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে চুলার পাত্রে পরিমাণ মতো দিয়ে জ্বাল দিয়ে চিতই পিঠা তৈরি করি আর ডিম পিঠাতে শুধু ডিম যোগ করি। এরপর চার রকমের ভর্তা দিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। প্রতিদিন আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি।

পিঠা ব্যবসায়ী সোবহান বলেন, আমি চিতই ও পুলি পিঠা তৈরি করে বাদাম ভর্তা, সরিষা ভর্তা দিয়ে বিক্রি করি। আমার দোকানে ‍চিতই পিঠা বেশি বিক্রি হয়।

রংপুর পার্ক মোড়ের পিঠা ব্যবসায়ী নিবরাজ খান বলেন, গুড়, নারকেল আর আতপ চালের আটা দিয়ে ভাপা পিঠা বানাই। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত নয়টা বা দশটা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করি। এতে তিন হাজার টাকার মতো পিঠা বিক্রি হয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest article