অনুবাদক: সাইয়্যেদ নুরসী
ভালো মানুষ হতে যে প্রয়োজনীয় গুণাবলি আবশ্যক তা এক নজরে জেনে নিন Walker Lamond এর বিখ্যাত বই “Rules for My Unborn Son” থেকে।
১. শৃঙ্খলার মেনে চলা:
কঠোর পরিশ্রম করা ও তা কী উপায়ে করবেন সেটা জানা একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। একটা সহজ কাজে সবাই অনুপ্রাণিত হয় কিন্তু কাজটা যখন শ্রমসাধ্য ও জটিল হয় তখন তা চালিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। কাজের ধরণ সহজ বা কঠিন হোক তা চালিয়ে যাওয়ার মানসিক শক্তি অবশ্যই রাখতে হবে। এমন মনোবল প্রদর্শন করলে চারপাশের মানুষ যেমন অনুপ্রাণিত হবে তেমনি আপানাকেও শক্তিশালী করবে।
২. দায়িত্ব নেয়া:
পুরুষ তার কাজের দায়িত্ব নেয়। এজন্য কাউকে বলতে হয় না যে, সে তা কখন বা কীভাবে করবে। কেউ কি পছন্দ করবে বা কি কাজ করবে তা ঠিক করে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়া সহজ কাজ নয়। তাবে একজন প্রকৃত মানুষ ভুল করলে তা অবলীলায় স্বীকার করে।
৩. প্রকৃত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা:
জীবন যুদ্ধে কোন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ উচিত আর কোনটি এড়িয়ে যাবেন সেটা জানা খুব জরুরি। সব যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ায় বীরত্বের কিছু নাই। কখনো চুপ থাকা ও নির্বিঘ্নে এড়িয়ে চলাই যথার্থ। এটা কারো মনুষ্যত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না।
৪. ভদ্রতার শিক্ষা:
মূল্যবোধ মেনে চলর। মহিলাদের সম্মান করুন। তাদের সাথে সদাচরণ করা প্রশংসনীয়। তাই;
– তারা প্রবেশের সময় দরজাটা খুলে ধরুন;
– বসার জন্য চেয়ারটা এগিয়ে দিন;
– টেবিলের কাছে বসতে তার চেয়ারটা ঠেলে দিন;
– কথা বলার সময় ভাষার বা শব্দচয়নের দিকে খেয়াল রাখুন।
৫. সততা অবলম্বন করা:
সৎ মানুষ আত্মবিশ্বাসী, সাহসী ও উদার হয়। তাদের প্রশংসা করার মত ব্যক্তিত্ব থাকে। জীবনে সফল হতে সততা অবলম্বন করা উচিত।
৬. নমনীয়তা:
আমাদের আত্মবিশ্বাস ও নমনীয়তা সমানভাবে থাকা দরকার। আত্মবিশ্বাস বেশি থাকলে উদ্ধত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আর নমনীয়তা বেশি থাকলে দমন নিপীড়নের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সবার এই দুটি বিষয়ের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখা যায় তা শিখতে হবে। একজন ভালো ও দক্ষ নেতা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রত্যেকের থাকা উচিত।
৭. নেওয়ার চেয়ে বেশি দেওয়ার অভ্যাস করা:
কোন কিছু প্রয়োজন হলে একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ তা মেটানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অন্যের চাহিদা পূরণ করা বা কাউকে সাহায্য করায় এক অপার আনন্দ অনুভব করা যায়। তাই কেউ আপনার জন্য কিছু করলো কিনা, সেটা নিয়ে ভাববেন না। অন্যের জন্য কী করতে পারেন তা ভাবুন।
৮. শিষ্টাচার:
শিষ্টাচার এমন একটা বিষয় যা সর্বদা মেনে চলতে হয়। আপনি বাড়িতে সবার সাথে টেবিলে খাচ্ছেন, নাকি পাঁচ তারকা হোটেলে খাচ্ছেন সেটা বিষয় নয়। প্রতিটি পরিস্থিতি ও স্থানেই শিষ্টাচারের দিকে খেয়াল রেখে চলতে হবে। আচার-ব্যবহার মানুষের পরিচয় বহন করে। এর মাধ্যমে কে কোন মর্যাদা ও কোন রুচির মানুষ তা জানা যায়। শিষ্টাচার শুধু আপনার ব্যক্তিতের প্রকাশ নয়, আপনি আপনার চারপাশের মানুষের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল তাও জানন দেয়।
৯. খোলামনের মানুষ হন:
অনুভূতি প্রকাশ ও সংবেদনশীল হওয়ায় দোষ নাই। কঠোর পুরুষতান্ত্রিকতা নিন্দনীয়। সমাজে এর উদাহরণ অনেক। এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আমাদের সন্তানদের শিক্ষা দিতে হবে। তাদেরকে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে হবে। এই মানবিক গুণ যার থাকে সবাই তাকে ভালোবাসে ও সম্মান করে।
১০. রাজা হতে চাইলে প্রজা হন আগে।
পুরুষত্ব সম্পন্ন ব্যক্তি নিজের চেয়ে অন্যকে প্রাধান্য দেয়। যদি একজন নেতা হতে চান, তাহলে আগে হাঁটু গেড়ে বসতে হবে এবং তোয়ালে দিয়ে অন্যের পা মুছতে হবে।