28 C
Dhaka
Saturday, June 28, 2025

কর্মসম্পাদনে স্ট্যামিনা বৃদ্ধির কৌশল

Must read

হাছান আর মাহমুদ:
স্ট্যামিনা হল সেই কর্মশক্তি এবং উদ্দীপনা যেটি আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য শারীরিক বা মানসিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে সাহায্য করে। স্ট্যামিনা বাড়ালে কোনো কাজের ক্ষেত্রে এটি আপনাকে অস্বস্তি বা চাপ সহ্য করতে সাহায্য করে। এটি ক্লান্তি এবং অবসাদও কমায়। উচ্চ স্ট্যামিনা থাকার ফলে আপনি কম শক্তি ব্যবহার করে উচ্চস্তরে আপনার দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারবেন।

গবেষকদের মতে এমন ৫টি উল্লেখযোগ্য উপায় রয়েছে যেটি আপনাকে স্ট্যামিনা বাড়াতে সহায়তা করবে।

প্রথমত ব্যায়াম
আপনি যখন নিজেকে দুর্বল অনুভব করবেন তখন উদ্যোম ফিরে পেতে শারীরিক ব্যায়াম আপনার মনের সর্বশেষ অবলম্বন হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ধারাবাহিক ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি স্ট্যামিনা বৃদ্ধি করতে পারেন।

২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ফার্মের একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা কাজে ক্লান্তি অনুভব করছিলেন। পরীক্ষামূলকভাবে ছয় সপ্তাহ নিয়মিত ব্যায়ামের পরে দেখা যায়, তাদের শক্তির মাত্রা উন্নত হয়েছে। তাদের কাজের ক্ষমতা, ঘুমের গুণমান এবং জ্ঞানের পরিধিতে পরিবর্তন দেখা গিয়েছে।

যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন
যোগব্যায়াম এবং ধ্যান আপনার স্ট্যামিনা এবং মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ফার্মের গবেষণার অংশ হিসাবে ২৭ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে ছয় সপ্তাহের জন্য যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তারা মানসিক চাপের মাত্রা এবং সুস্থতার অনুভূতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখেছে। পরবর্তীতে তারা অধৈর্য এবং ক্লান্তি কমে যাওয়ার ব্যাপারে প্রতিবেদন জমাদান করেন।

সঙ্গীত
গান শোনা আপনার হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে। এই গবেষণায় ৩০ জন অংশগ্রহণকারী তাদের নির্বাচিত সঙ্গীত শোনার সময় এবং ব্যায়াম করার সময় হৃদস্পন্দন হ্রাস পেয়েছিল। এতে দেখা যায় তারা সঙ্গীত ছাড়া ব্যায়াম করার চেয়ে সঙ্গীত শোনার সময় কম ব্যায়াম করতে সক্ষম হয়েছিল।

ক্যাফেইন
২০১৭ সালের একটি গবেষণায়, নয়জন পুরুষ সাঁতারু ফ্রিস্টাইল স্প্রিন্টের এক ঘন্টা আগে ৩ মিলিগ্রাম ক্যাফেইনের ডোজ গ্রহণ করেছিলেন। এই সাঁতারুরা তাদের হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি না করে তাদের দৌড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি করতে পেরেছিলেন। অর্থাৎ আপনি ব্যায়াম করার জন্য খুব ক্লান্তি বোধ করছেন এমন দিনগুলিতে ক্যাফেইন আপনাকে উত্সাহিত করতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে যে, ক্যাফেইনের উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হওয়া যথাযথ নয়। কারন যেহেতু আপনি সহনশীলতা তৈরি করতে চাচ্ছেন। কেননা ক্যাফেইনে প্রচুর চিনি বা কৃত্রিম স্বাদযুক্ত উপাদানের মিশ্রণ রয়েছে। যেটি স্বাস্থ্যের পক্ষে তেমন উপকারী নয়।

অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং জীবনীশক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি জ্ঞানভিত্তিক ফাংশনালিটি বাড়াতে এবং চাপ কমাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। অশ্বগন্ধা শক্তির মাত্রা বাড়াতেও দেখানো হয়েছে। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায়, ৫০ জন প্রাপ্তবয়স্ক অ্যাথলেটিক  ১২ সপ্তাহ ধরে অশ্বগন্ধার ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল গ্রহণ করেছিলেন। তারা তাদের কার্ডিওরেসপিরেটরি সহনশীলতা এবং সামগ্রিক জীবনের মান প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায় অনেক বেশি বাড়িয়েছে।

তবে মনে রাখতে হবে যে, আপনি যখন আপনার শক্তির মাত্রা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেন, তখন মনে রাখবেন যে শক্তির ভাটা এবং প্রবাহ অনুভব করা স্বাভাবিক। সর্বদা আপনার সর্বোচ্চ ফলালফলে কাজ করার আশা করবেন না। আপনার শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে সচেতন থাকবেন। নিজেকে ক্লান্তির দিকে ঠেলে দেওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।

তবুও আপনার যদি মনে হয় যে, স্ট্যামিনা বাড়ানোর এসকল প্রচেষ্টায়ও আপনি আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছেন না। তাহলে আপনি একজন ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন। তিনি আপনার কর্মক্ষমতা প্রভাবিত করছে এমন কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে কিনা তা বের করতে পারেন। সর্বপরি সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আপনার আদর্শ পরিকল্পনা থাকা উচিত।
লেখক: শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest article