বই পর্যালোচনা: মুসলিম জাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে?

মুতাসিম বিল্লাহ:

বইটিতে আটটি অধ্যায় রয়েছে, বাংলা ভাষায় চারখন্ডে বইটি অনুদিত হয়েছে। প্রথম খন্ডে লেখক প্রাচীন সভ্যতাগুলোর তুলনায় ইসলামি সভ্যতার তুলনামুলক আলোচনা, ইসলামি সভ্যতার মূলনীতি ও ভিত্তি, ইসলামী সভ্যতার বৈশিষ্ট্যসমূহ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদান- অধিকার, স্বাধীনতা, পরিবার, সমাজ, মুসলিম ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। জ্ঞান-সংস্থা-ইসলাম এবং জ্ঞানের নতুন দর্শন, ইসলাম এবং বিজ্ঞানীদের চিন্তার পরিবর্তন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। দ্বিতীয়খন্ডে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইসলামি সভ্যতায় গ্রন্থাগার, জ্ঞানী-সমাজ, জীবনঘনিষ্ঠ বিজ্ঞানে মুসলিমদের অবদান, বিজ্ঞানের প্রচলিত শাখাগুলোর বিকাশ, নতুন বিজ্ঞানের উদ্ভাবনে মুসলিমদের অবদান নিয়ে আলোচনা করেছেন। তৃতীয় খন্ডে ইসলামি সভ্যতায় সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান তথা- খিলাফত ও নেতৃত্ব, মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কার্যালয়, বিচারবিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিভাগ, পান্থনিবাসও সরাইখানা নিয়ে দালিলিক প্রমাণ হাজির করেছেন। চতুর্থখন্ডে ইসলামি সভ্যতায় সৌন্দর্যচর্চা- ইসলামি শিল্পকলা, যন্ত্রপাতি ও দ্রব্যসামগ্রীর নান্দনিকতা, পরিবেশের সৌন্দর্য ও নান্দনিকতা, মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য, মানুষের নৈতিক ও চারিত্রিক সৌন্দর্য, নাম, পদবি ও শিরোনামের সৌন্দর্য, একটি নান্দনিক ইসলামি শহরের নমুনা হিসেবে কর্ডোভার আলোচনা তুলেছেন। সর্বশেষ ইউরোপীয় সভ্যতায় ইসলামি সভ্যতার প্রভাব ও ইসলামি সভ্যতার মূল্যায়নে পশ্চিমা সুবিবেচকদের স্বীকৃতি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন লেখক।

বই পর্যালোচনা-

অধ্যাপক ড. রাগিব সারজানি ১৯৬৪ সালে মিশরে জন্মগ্রহণ করেন, ১৯৮৮ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ থেকে এক্সিলেন্ট গ্রেড নিয়ে স্নাতক করেন। ১৯৯১ সালে তিনি পবিত্র কুরআন হিফজ সম্পন্ন করেন। ১৯৯২সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক্সিলেন্ট গ্রেড নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।১৯৯৮ সালে তিনি ইউরোলজি ও কিডনি সার্জারির ওপর ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধ্যাপক। আরব বিশ্ব তাকে চেনে একজন বিশিষ্ট ইতিহাসগবেষক, ইসলামি চিন্তাবিদ ও দাঈ হিসেবে। ড. রাগিব সারজানির প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধ শতাধিক, যার বেশ কয়েকটি অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ, ইন্দোনেশীয়, রুশ ও তুর্কি ভাষায়।তার লেখাগুলো অধিকাংশই ইতিহাস নির্ভর, ধর্মীয় ও মোটিভেশনাল।

ড. রাগিব সারজানির লেখা ‘মুসলিমজাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে’ বইটি একটি ভিন্নধর্মী ইতিহাসগ্রন্থ।লেখক বইটির শুরুতেই বলেছেন ‘আমরা গড়পড়তা সাধারণ সভ্যতা নিয়ে- যার অনেক তুল্য ও সমকক্ষ রয়েছে- আলোচনা করব না, বরং আমরা ‘নমুনা-সভ্যতা’ সম্পর্কে আলোচনা করব, যার মানদণ্ডে নিজেদের যাচাই করা প্রত্যেক সমাজের উচিত’।

তাই বইটিতে মিলবে ‘একের ভিতর সব’।বিশেষ করে বিজ্ঞানময় কুরআনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে- নব আবিষ্কার, অতীতের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মুসলিমদের জ্ঞানের আমানত, নৈতিকতা ও সচেতনতার বিষয়গুলো। অতিসরলিকরণে মধ্যযুগের ‘বর্বরতা’ যে সমগ্র দুনিয়া জুড়ে ছিল না বরং তার বিপরীতে মুসলিমরা যে মধ্যযুগে এক নতুন সভ্যতার সূচনা করেছিল, সেই ‘ইসলামি সভ্যতার’ আলোকময়তার বৈশিষ্ট্যগুলো-পৃথিবীর চলমান সভ্যতার বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধন, আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ, জ্ঞান, দান, মানবিকতা, নৈতিক চরিত্রের মান উন্নয়ন ও সংরক্ষণ, নারী-পুরুষ তথা সমগ্র জীবন-জগতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মুসলিমদের কি কি অবদান আছে, সে বিষয়ে এক নজরে প্রামাণিক দলীল নিয়ে পাঠকের সামনে হাজির হয়েছেন লেখক।

লেখক সভ্যতার সংজ্ঞায়ন ও এর উত্থান-পতনের কারণ বলেছেন- ‘সভ্যতা হলো স্রষ্টার সঙ্গে এবং বসবাসরত মানববণ্ডলী ও ঐশ্বর্যপূর্ণ পরিবেশ-প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক নির্মাণে মানুষের শক্তি ও যোগ্যতা…। যখনই এই সম্পর্কের উন্নতি ঘটে তখনই সভ্যতার অগ্রগতি ও উৎকর্ষ সাধিত হয়। আর যখনই এ সম্পর্কের অবনতি ঘটে ও দুর্বল হয়ে পড়ে তখনই মানুষ পিছিয়ে পড়ে, তার অধঃপতন ঘটে।’ তাই সভ্য মানুষ বলতে লেখকের ভাষ্য হলো- ‘যে মানুষ উন্নত হাতিয়ার উদ্ভাবন করে তা আত্নরক্ষা, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে ব্যবহার করে সে সভ্য; কিন্তু জুলুম, অত্যাচার, উৎপীড়নে তা ব্যবহার করলে সে অসভ্য মানুষ। সভ্যতা বিনির্মানে তাই চিন্তা-বিশ্বাসের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সে প্রসঙ্গে লেখক জ্ঞানের উদ্ভাবন, পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বিশ্বাস, স্রষ্টা সম্পর্কিত ধারনার সংশোধন ইত্যাদির পাশাপাশি ইসলামি দর্শন, ইতিহাস, সাহিত্য, বিজ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণ ও সমাজবিদ্যায় মুসলিমদের অবদান তুলে ধরেছেন। একই সাথে ইসলামি সভ্যতায় মানবাধিকার, চিন্তা ও ধর্মের স্বাধীনতা, মুসলিম পরিবার, সমাজের কাঠামো, বিচারবিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্যবিভাগ, পান্থনিবাস, মুসাফিরখানা, ইসলামি শিল্পকলা, স্থাপত্যকলা, অলংকরণশিল্প, আরবি লিপিকলা, তৈজসপত্রের নান্দনিকতা, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোর সৌন্দর্য, পরিবেশের সৌন্দর্য, বাগানচর্চা, চারিত্রিক সৌন্দর্য, সূক্ষ রুচিবোধ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

চিন্তা ও ভাবনায়, জ্ঞানবিজ্ঞান, ভাষা-সাহিত্য ও শিল্প-সব ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় সভ্যতার ওপর ইসলামি সভ্যতার প্রভাব লেখক উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর প্রামাণিকতাসহকারে তুলে ধরেছেন।

ইসলামী সভ্যতায় মানুষকে পাঁচটি সামগ্রিক জিনিসের সুরক্ষাদান করেছে।তা হলো: দ্বীন, প্রাণ, বুদ্ধি, বংশ ও সম্পদ। যা-কিছু এই পাঁচটিকে বা এই পাঁচটির কোনোটিকে সুরক্ষা দান করে তা্-ই কল্যাণ। যা-কিছু এগুলোর কোনো একটিকে বিঘ্নিত করে তা-ই অকল্যাণ।সে কারণেই ইসলামি সভ্যতায় বিড়ালকে বেঁধে রেখে মেরে ফেলার কারণে এক নারীর জাহান্নামি হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছে এবং এই সভ্যতাই পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে এক পুরুষের বা অন্য বর্ণনামতে দুশ্চরিত্রা নারীর জান্নাতি হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছে।

ইসলামি সভ্যতার ক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রধান দিক হলো এর মানবিকতা। মানুষই ইসলামি সভ্যতায় মূল কেন্দ্রবিন্দু এবং মানবিক কল্যাণ ও সম্মান সুরক্ষায় দৃঢ় খুঁটি। তাই নিজ ও পরিবার শক্তিশালী হলে এবং পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণ ও কাজকর্ম যথাযথ হলে সমাজও শক্তিশালী হয়, সমাজ সুন্দরভাবে গতিশীল থাকে। সমাজের সদস্যদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক সৌজন্যবোধ জাগরূক থাকে। ইসলামি সমাজে বড়রা ছোটদের স্নেহ করে, ধনীরা দরিদ্রদের প্রতি সহানুভুতি প্রকাশ করে, শক্তিমানেরা দুর্বলদের সাহায্য করে; বরং তা একটি দেহের মতো, তার কোনো একটি প্রত্যঙ্গ পীড়িত হলে গোটা দেহই পীড়িত বোধ করে; তা একটি অট্টালিকার মতো, যার এক অংশ অপর অংশকে দৃঢ় রেখেছে। এতে থাকা যাকাত পদ্ধতিতে যিনি যাকাত দেন তা তার অন্তর থেকে কৃপণতা, লোভ, কুক্ষিগত করে রাখার মনোভাব ইত্যাদি দূরীভূত করে দেয়। একইভাবে তা দরিদ্র, মুখাপেক্ষী ও যাকাতের হকদারের অন্তর থেকে হিংসা, বিদ্বেষ এবং ধনিক শ্রেণি ও সম্পদশালীদের প্রতি যে ঘৃণা তা দূর করে দেয়। ফলে যে সমাজে এই মহান ফরজটি আদায় করা হয় সেখানে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে হৃদ্যতা, ভালোবাসা, পারস্পরিক সাহায্য- সহযোগিতা ও দয়া-মমতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

জ্ঞানের ক্ষেত্রে পারস্য, রোম কিংবা গ্রিস- সব জায়গাতেই অতীতে জ্ঞানীরা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করতেন। জ্ঞানের উত্তরাধিকার তাদের মধ্যেই বিরাজমান ছিল।কিন্তু ইসলামী সভ্যতায় রাসুল সা. এক বাক্যে ঘোষণা করেছেন, জ্ঞান অন্বেষণ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ।ফলে জ্ঞান অর্জন একটি ধর্মীয় অবশ্যকর্তব্যে পরিণত হয়।রাসুল সা. এই নীতির বাস্তবিক অনুশীলন করেছিলেন। বদর যুদ্ধে মক্কার অনেক মুশরিক মুসলিমদের হাতে বন্দি হয়েছিল। তিনি তাদের অভিনব মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছিলেন। অর্থ্যাৎ, বন্দিদের যে-কেউ মদিনার দশজন নারী-পুরুষকে পড়া ও লেখা শেখালে মুক্তি পেয়ে যাবে। এটা ছিল উন্নত সভ্যতার চিন্তা, যা সে সময়ে পৃথিবীর কেউ আদৌ কল্পনা করেনি, এমনকি তার পরের কয়েক শতাব্দীতেও তা ভাবেনি।রাসুলের এই নিদের্শণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে জ্ঞানের আসর, বায়তুল হিকমার মতো গ্রন্থাগার, খলিফা মামুনের সময় অনুদিত বইয়ের সমপরিমান স্বর্ণ দিয়ে মানুষকে অনুবাদে উদ্ধুদ্ধ করতে দেখি, জ্ঞানের জন্য ওয়াকফ সম্পত্তি দিতে দেখি যা মুসলিমজাতি বিশ্বকে শিখিয়েছে।এছাড়াও তারা জ্ঞান, বিজ্ঞান, ও বাস্তব জীবনে জীব-উদ্ভিদের অধিকার সুরক্ষায় এমন অসংখ্য নতুন বিষয়ের অবতরণ করেছেন তা এর আগে কেউ করেনি।

বইটি পড়ে আমার উপলদ্ধি হয়েছে লেখক ইসলাম যে একটি পুর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের নাম তা উদাহরণসহ তুলে এনেছেন।লেখক তার মুন্সিয়ানা দক্ষতায় ও ইতিহাসের দলিল দস্তাবেজ ঘেটে এমনভাবে লিখেছেন এবং অনুবাদকদ্বয় ও এমনভাবে ভাবানুবাদ করেছেন যেন বইটি আপনাকে সকল সভ্যতা পরিভ্রমণ করে আপনাকে নিয়ে আসবে ইসলামী সভ্যতায়। আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে অসংখ্য দার্শনিক, বিজ্ঞানী, গবেষক ও তাদের গবেষণার সাথে। বিশেষ করে, এরিস্টেটল, প্লেটো, সক্রেটিস, কোপার্নিকাস, জিয়োর্দানো ব্রুনো, গ্যালিলিও, নিউটন, জাবির ইবনে হাইয়ান, আল-খাওয়ারিজমি, আল-রাযি, আল-হাসান ইবনুল হাইসাম, ইবনে নাফিস, ফ্রান্সিস বেকন, মুস্তাফা নাজিফ, কার্ল পিয়ারসন, জলদাকি, তুগরায়ি, মুসা ইবনে শাকির, আয-যাহরাবি, ইবনুল বাইতার, উইলিয়াম হার্ভে, মহিউদ্দিন আত-তাতাবি, ম্যাক্স মেয়েরহোফ, জর্জ সার্টন, এমিল ডুর্খেইম, হিবাতুল্লাহ ইবনে মালকা, হিপোক্রেটিস, গ্যালেন, আর্কিমিডিস, হুনাইন ইবনে ইসহাক, ইয়াহইয়া ইবনে মাসাওয়াইহ, ইবনে সিনা, আলি ইবনে ঈসা আল- কাহহাল, তিসিবিওস, হেরন অফ আলেকজান্দ্রিয়া, ব্রেইজ প্যাসকেল, আলহামদানি, আবু ইউসুফ আল-কিন্দি, নাসির উদ্দিন তুসি, ইবনে হাযম আল-আন্দালুসি, আল ইদরিসি, আবু উবাইদুল্লাহ আল-আন্দালুসি, আল বাত্তানি, আবদুর রহমান আস সুফি, আবুল ওয়াফা আল-বুযজানি, আবু ইসহাক আন-নাক্কাশ আয-যারকালি, আবুল ইয়ুসর বাহাউদ্দিন আল-খারাকি আল-বাদি আল-আস্তুরলাবি, ইবনে শাতির, উলুগ বেগ, আর-রুদানি শামসুদ্দিন আল-ফাসি, মারয়াম আল আস্তুরাবি, বদিউযযামান আল-জাযারি, তাকিউদ্দিন আদদিমাশকি, আল-ফারাবি, ইবনে ‍রুশদ, ইবনে খালদুনসহ অনেক মনীষি ও তাদের রেখে যাওয়া অবদান জানা যাবে বইটি থেকে। সন্তানকে মানুষ হিসেবে গড়তে মায়ের ভূমিকা, বাবার ভূমিকা, রাষ্ট্রের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত, জ্ঞান সাধনায় নিজেকেও কতটা স্বপে দিতে হয় তার বাস্তবিক উদাহরণ মিলবে এই গ্রন্থে।

কেন বইটি পড়বেন-

এটি লেখকের এমন একটি অনবদ্য সৃষ্টি যা শুধু গবেষক, কিংবা ইতিহাস নির্ভর পাঠক নন বরং বইটি থেকে উপকৃত হতে পারে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একজন শিশু থেকে বার্ধক্যে উপনীত যেকোনো বয়সী মানুষ। শিক্ষিত থেকে স্বল্পশিক্ষিত, আস্তিক থেকে নাস্তিক, দিনমজুর থেকে সমাজের উচ্চবিত্ত তথা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্যেই বইটিতে মিলবে জীবন চলার পাথেয়।করোনাকালীন মহামারীর এই দুর্যোগের দিনে হতাশায় না থেকে জ্ঞান ও দানের চর্চা কিভাবে জীবনকে, জাতিকে বদলে দেয় তা জানতে; যে কোনো সঙ্কটে সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে; ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টেকসই উন্নয়নের মডেল জানতে, এককেন্দ্রিক উৎস থেকে জ্ঞান নিয়ে মধ্যযুগকে পুরো পৃথিবীর জন্য অন্ধকারযুগ না বলতে চাইলে, অন্য ধর্মাবলম্বী বা নাস্তিকতায় বিশ্বাসী থেকেও মুসলিমদের অতীত ইতিহাস গোঁড়া, অন্ধ, মৌলবাদী নাকি সৃজনশীল, প্রকৃতি ও মানবতাবাদী এ বিষয় বিকল্প মত জানতে, একজন মুসলিম হিসেবে শেকড়ের সন্ধান জানতে, কিছু মানুষের অপকর্মের দায়ভার সবাইকে না দিয়ে, প্রকৃত টেকসই সভ্যতা বিনির্মানকে বুঝতে; সমাজ, বিজ্ঞান, কলা ও মানবিকী অনুষদের শিক্ষার্থীর জ্ঞানের প্রাথমিক তৃষ্ণা মেটাতে বাস্তব নির্ভর তথ্য-উপাত্ত, উদাহরণ মিলবে এ গ্রন্থটিতে। যারা স্বপ্ন দেখছেন এক সম্ভাবনার, ন্যায়ের, সাম্যের, জবাবদিহিতার দুনিয়ার। তাদের চিন্তা ও বিশ্বাসকে টেকসই ও মজবুতি গড়তে এই গ্রন্থটি পাঠ খুবই জরুরি।

একনজরে বইটি- বইয়ের নামঃ মুসলিমজাতি বিশ্বকে কী দিয়েছে?

মূল আরবি গ্রন্থ: মা-যা কাদ্দামাল মুসলিমুনা লিল আলাম

লেখকের নামঃ ড. রাগিব সারজানি

অনুবাদ- আবদুস সাত্তার আইনী (১ম, ২য় ও ৪র্থ খণ্ড)

উমাইর লুৎফর রহমান (৩য় খণ্ড)

প্রকাশক- মাকতাবাতুল হাসান

প্রচ্ছদ-আখতারুজ্জামান

পৃষ্ঠাসংখ্যা-১৩৮০

মুল্য-২৯০০টাকা মাত্র (চারখন্ড একত্রে)

প্রথম প্রকাশ- জুমাদাল উলা ১৪৪২/জানুয়ারি ২০২১

তৃতীয় মুদ্রণ- জুমাদাল উখরা ১৪৪২/ফেব্রুয়ারি ২০২১

ISBN:978-984-801264-

লেখক পরিচিতি: শিক্ষক, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version