ভালো লাগা থেকেই পড়েছি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে কাকতালীয়ভাবে এক বান্ধবীর সঙ্গে পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করি। পরিবারের বিরোধিতা করে বাংলা বিভাগে ভর্তিও হয়ে যাই। ভেবেছিলাম পরের বছর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির চেষ্টা করব। কিন্তু ততদিনে বিভাগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত হয়ে যাই।

হাবিবুর রহমান

নাম তাইয়্যেবুন নাহার মিমি। তবে সবার কাছে মিমি নামেই অধিক পরিচিত তিনি। পড়াশোনা করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। সম্প্রতি শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
মিমি’র কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত দেবিদ্বার উপজেলার বাকসার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সরকারি চাকরিজীবী বাবা মোখলেছুর রহমান ও গৃহিণী মা আমেনা বেগমের চতুর্থ সন্তান তিনি। দেবিদ্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে আর দেবিদ্বার মফিজউদ্দীন আহমেদ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করেন। দেবিদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করেন।

তাইয়্যেবুন নাহার মিমি বলেন, আমি বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছি। ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবো। কিন্তু ডাক্তারি ভর্তি হতে বিফল হয়ে পরের বছর আবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে কাকতালীয়ভাবে এক বান্ধবীর সঙ্গে পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করি। পরিবারের বিরোধিতা করে বাংলা বিভাগে ভর্তিও হয়ে যাই। ভেবেছিলাম পরের বছর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির চেষ্টা করব। কিন্তু ততদিনে বিভাগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত হয়ে যাই। এরপর রেজাল্ট ভালো করার পর মনে উৎসাহ আসে বাংলা নিয়ে পড়ার। আমার একজন শিক্ষিকা আমাকে সৃজনশীল লেখালেখি শুরু করার অনুপ্রেরণা দেন। এভাবে যাত্রাটা শুরু হয়। পরে আর অন্য কোথাও যাওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি আমি থিয়েটার, অনুপ্রাস, কালের কণ্ঠ শুভ সংঘ এ কাজ করেছি। আমার পছন্দের বিষয় সাহিত্য, আবার ভর্তিও হয়েছি সাহিত্যে। সুতরাং ভালো লাগা থেকেই পড়েছি। বিভাগে প্রথম স্থান দখল করার পর থেকে আরও পরিশ্রম করার আগ্রহ জাগে।
পড়াশোনার পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীর কেমন হওয়া উচিত এমন প্রশ্নের জবাবে মিমি বলেন, বর্তমান যুগে গতানুগতিক পড়াশোনার কিছুই হয় না। গবেষণাধর্মী ও প্রায়োগিক পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের আসা উচিত। সাহিত্যের মত বিষয় নিয়েও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষণা করা উচিত। শিক্ষার্থীরা বিষয়ভিত্তিক নয়, বহুমাত্রিক বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জন করুক, সফলতার জন্য একমুখী চিন্তার চেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অগ্রগামী হোক। এতেই রাষ্ট্র ও জনগণ দুইয়ের মঙ্গল।

তিনি জানান, বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান মূলত আমার স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপ। এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ইংরেজি মাধ্যম কলেজে শিক্ষকতা করেছি। নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করেছি। আমাকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন আমার পরিবার, শিক্ষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। পরিশ্রম আমার স্বপ্নের পেশা শিক্ষকতার সঙ্গে আমার পথ বেঁধে দিল।

লেখক: শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version